হার্ট অ্যাটাক কেনো হয় ও প্রতিকার কী?

হার্ট অ্যাটাক কেনো হয় ও প্রতিকার কী?

হার্ট অ্যাটাক হলো একটি জরুরী অবস্থা যা দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি অনুভব করলে, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

 

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

 

  • বুকে ব্যথা: বুকের মাঝখানে, বাঁদিকে, বা ডানদিকে তীব্র, চাপ, বা জ্বলন্ত ব্যথা। ব্যথাটি কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে বা চলে গিয়ে আবার ফিরে আসতে পারে।
  • শ্বাসকষ্ট: হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করা।
  • অতিরিক্ত ঘাম: ঠান্ডা ঘামে ভিজে যাওয়া।
  • বমি বমি ভাব: বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
  • মাথা ঘোরা: মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

 

হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয়:

 

  • অ্যাম্বুলেন্সে ব্যবস্থা করুন: দ্রুততম সময়ে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কল করুন।
  • অ্যাসপিরিন প্রদান করুন: যদি রোগীর অ্যাসপিরিনে অ্যালার্জি না থাকে, তাহলে ৩০০ মিলিগ্রাম অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খাওয়াতে পারেন।
  • শান্ত রাখুন: রোগীকে শান্ত এবং আশ্বস্ত রাখুন।
  • প্রয়োজনে সিপিআর প্রদান করুন: যদি রোগী শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে দেয় বা অজ্ঞান হয়ে যায়, তাহলে তাদের সিপিআর প্রদান করুন।

 

হাসপাতালে:

 

  • চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন: হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
  • পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুন: চিকিৎসক রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেন, যেমন ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, রক্ত পরীক্ষা ইত্যাদি।
  • চিকিৎসা: হার্ট অ্যাটাকের ধরন ও তীব্রতার উপর নির্ভর করে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করবেন। এর মধ্যে থাকতে পারে ওষুধ, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, বাইপাস সার্জারি ইত্যাদি।

 

হার্ট অ্যাটাকের কারণ:

 

  • কোলেস্টেরলের প্লাক: করোনারি ধমনীতে কোলেস্টেরল জমা হলে রক্তনালী সরু হয়ে যায় এবং রক্ত ​​প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং প্লাক জমা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
  • ধূমপান: ধূমপান রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং প্লাক জমা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
  • ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং প্লাক জমা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
  • পারিবারিক ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনার ঝুঁকি বেশি।
  • অন্যান্য কারণ: স্থূলতা, শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয়তা, অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান, এবং মানসিক চাপ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

 

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ:

 

হার্ট অ্যাটাক থেকে সুরক্ষিত থাকতে করণীয়:

হার্ট অ্যাটাক হলো একটি জরুরী অবস্থা যা দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। হার্ট অ্যাটাক থেকে সুরক্ষিত থাকতে, আপনাকে অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

 

জীবনধারা পরিবর্তন:

  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান:
    • প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি, এবং গোটা শস্য খান।
    • স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট, এবং কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার কম খান।
    • সোডিয়াম এবং চিনিযুক্ত খাবার কম খান।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন:
    • প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি-তীব্রতার অ্যারোবিক ব্যায়াম করুন।
    • প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন শক্তিশালী পেশী তৈরির ব্যায়াম করুন।
  • ধূমপান ত্যাগ করুন:
    • ধূমপান হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায়।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
    • অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন:
    • দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

 

নিয়মিত চিকিৎসা পরীক্ষা:

  • আপনার রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষা করুন:
    • উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন:
    • উচ্চ কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
    • ডায়াবেটিস হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

 

অন্যান্য ঝুঁকি কমানোর উপায়:

  • পর্যাপ্ত ঘুমান:
    • প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • অ্যালকোহল পান কমিয়ে দিন:
    • অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • আপনার ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন:
    • আপনার ডাক্তার আপনাকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করার জন্য নির্দিষ্ট পরামর্শ দিতে পারেন।

 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

  • হার্ট অ্যাটাক যেকোনো বয়সে হতে পারে, তবে বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি থাকে।
  • পুরুষদের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি নারীদের তুলনায় বেশি।
  • ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, উচ্চ কোলেস্টেরল, স্থূলতা ইত্যাদি হার্ট এটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • হার্ট অ্যাটাক হল হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহকারী ধমনীতে ব্লক তৈরি হওয়ার ফলে হৃৎপেশীর ক্ষতি।

More news and event